জৈব যোগ গঠনে কার্বন মৌলের বিশিষ্টতা

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র | | NCTB BOOK

জৈব যোগ গঠনে কার্বন মৌলের বিশিষ্টতা

১. টেট্রাভ্যালেন্সি

  • কার্বনের পরমাণুতে ৪টি ভালোেন্ট ইলেকট্রন থাকে, যা ৪টি সমযোজী বন্ধন গঠনে সক্ষম।
  • এই গুণের জন্য কার্বন একক, দ্বৈত বা ত্রৈত বন্ধন গঠন করতে পারে।

২. শৃঙ্খল গঠন (Catenation)

  • কার্বন-কার্বন বন্ধন শক্তিশালী হওয়ায় কার্বন একই ধরনের পরমাণুর সাথে দীর্ঘ শৃঙ্খল বা রিং তৈরি করতে পারে।
  • এটি সরল শৃঙ্খল, শাখাময় শৃঙ্খল, বা চক্রাকার হতে পারে।

৩. বহুস্তরিক বন্ধন ক্ষমতা

  • কার্বন একক (C-C), দ্বৈত (C=C), বা ত্রৈত (C≡C) বন্ধন গঠন করতে পারে।
  • এই বৈশিষ্ট্য জৈব যৌগের গঠন বৈচিত্র্যকে বাড়ায়।

৪. হাইব্রিডাইজেশন ক্ষমতা

  • কার্বন sp³, sp², এবং sp হাইব্রিডাইজেশন করতে পারে।
  • এটি বিভিন্ন আকৃতি এবং বৈশিষ্ট্যের জৈব যৌগ তৈরিতে সক্ষম।

৫. বৈচিত্র্যময় যৌগ গঠন

  • কার্বন বিভিন্ন মৌলের সাথে (যেমন: হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার) বন্ধন গঠন করতে পারে।
  • ফলে অ্যালকেন, অ্যালকিন, অ্যালকোহল, কার্বোক্সিলিক অ্যাসিডের মতো অসংখ্য জৈব যৌগ গঠিত হয়।

৬. সমমেরুতা

  • কার্বন যৌগসমূহ সমমেরুতা প্রদর্শন করতে পারে, যা একই রাসায়নিক গঠন কিন্তু ভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য তৈরি করে।
  • উদাহরণ: স্টেরিওসমেরিজম ও জ্যামিতিক সমমেরুতা।

৭. পলিমার গঠন

  • কার্বনের শৃঙ্খল গঠনের ক্ষমতা পলিমার তৈরি করতে সাহায্য করে।
  • উদাহরণ: পলিথিন, পলিস্টাইরিন, যা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয়।

৮. কার্যকরী দল যুক্ত করার ক্ষমতা

  • কার্বন বিভিন্ন কার্যকরী দল (যেমন: -OH, -COOH, -NH₂) যুক্ত করে নতুন বৈশিষ্ট্যের যৌগ তৈরি করতে পারে।

৯. জৈব যৌগের স্থায়িত্ব

  • কার্বন-কার্বন এবং কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধন অত্যন্ত স্থিতিশীল, যা জৈব যৌগের দীর্ঘস্থায়ী প্রকৃতি নিশ্চিত করে।

এই বৈশিষ্ট্যগুলির জন্যই কার্বন জৈব রসায়নের কেন্দ্রবিন্দু এবং জীবনের প্রধান নির্মাণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়।

Content added By
Promotion